সব
বরিশালে গ্যাস, কাচামাল সহ নানা কারনে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে লঞ্চ ও পণ্যবাহী জাহাজ নির্মাণ শিল্প। কীর্তনখোলা নদী তীর সহ বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা এ জাহাজ নির্মান কেন্দ্রীক ডকইয়ার্ডে শিল্পের প্রসার ঘটছে ধীরগতিতে। তাছাড়া পদ্মা সেতু চালুর পড় লঞ্চ সার্ভিসে যাত্রীদের আগ্রহ কমায় কর্মসংস্থান হারাচ্ছে শ্রমকিরা। যেকারনে বেসরকারি খাতে গড়ে ওঠা এ শিল্পে প্রায় ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে এখন চ্যালেঞ্জে পরেছেন ব্যবসায়ীরা।
ষাটের দশকে বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের নয়ানী এলাকায় সাহেবের হাট খালের পাশে ছোট পরিসরে একটি ডকইয়ার্ড তৈরি করেন প্রয়াত লঞ্চ ব্যবসায়ী গোলাম মাওলা। সেখানে চারটি কাঠের লঞ্চ নির্মাণের মধ্য দিয়ে নৌযান নির্মাণের যাত্রা শুরু হয়। ধীরে ধীরে বিভিন্ন স্থানে মালবাহী জাহাজও নির্মাণ শুরু হয়।
কীর্তনখোলা নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে প্রায় এক ডজন ডকইয়ার্ড। এর মধ্যে বেলতলা, চরকাউয়া, দপদপিয়া, ধানগবেষনা উল্লেখযোগ্য। এসব ডকইয়ার্ডে নির্মাণ করা হচ্ছে ছোট-বড় লঞ্চ, যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী জাহাজ। বরিশাল-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বিলাসবহুল নৌযান এখন তৈরি হচ্ছে এসব ডকইয়ার্ডে। তবে সংশ্লিস্টরা মনে করেন, গ্যাস, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ এবং স্বল্প সুদে ঋণ পেলে বরিশালে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে সম্ভাবনা বাড়ানো যায়।
সুন্দরবন লঞ্চের মাস্টার মজিবর রহমান বলেন, নগরীর বেলতলা খেয়াঘাট এলাকায় কীর্তনখোলা তীরবর্তী সুরভী ও সুন্দরবন লঞ্চ কোম্পানির শিপইয়ার্ড এক যুগেরও বেশি সময় ধরে লঞ্চ ও পণ্যবাহী কার্গো নির্মাণ করে আসছে। বছরে প্রায় ২-৩টা লঞ্চ তৈরি করা হয় শিপইয়ার্ড দুটি থেকে। পাশাপাশি অ্যাডভেঞ্চার কোম্পানির নিজাম শিপইয়ার্ড ও এম খান শিপইয়ার্ড রয়েছে দপদপিয়া ফেরিঘাট সংলগ্ন এলাকায়। এছাড়া কেডিসি সংলগ্ন চাঁদমারী এলাকায়ও ছোট-ছোট পণ্যবাহী ট্রলার নির্মাণের ডকইয়ার্ড রয়েছে।
জাহাজ নির্মান শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ শিল্পে বিদ্যুৎ ঘাটতিসহ ভ্যাট ও আগাম আয়করের খড়গ রয়েছে। মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরত্বে ভোলায় গ্যাস থাকলেও গ্যাসনির্ভর এ শিল্পে নেই কোনো গ্যাস সুবিধা। ফলে প্রতিনিয়ত এসব বিরূপ পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করেই টিকে আছে বরিশালের জাহাজ নির্মাণ শিল্প। ভোলার গ্যাস বরিশালে এলে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে খরচ অনেক কম হতো। তাছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ খরচও বেশি।
এব্যপারে লঞ্চ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি ও সুন্দরবন নেভিগেশনের স্বত্বাধিকারী সাইদুর রহমান রিন্টু সাংবাদিকদের বলেন, বরিশালে এ ব্যবসার অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। বরিশালের শ্রমিক ও কারিগররা এখন অনেক দক্ষ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু এখনো বরিশালের নৌযান নির্মাণ শিল্পে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো বিনিয়োগে আগ্রহ কম। তাছাড়া গ্যাস নেই।
মন্তব্য